
প্রদেশ কংগ্রেস দপ্তরে হিন্দিভাষী গুণ্ডাদের হাতে আক্রান্ত গর্গ চট্টোপাধ্যায়: প্রতিবাদে পথে বাংলা পক্ষ
কলকাতা, ৩০ আগস্টঃ গতকাল ২৯ আগস্ট প্রদেশ কংগ্রেসের রাজ্য সদর দপ্তর বিধান ভবনে তাণ্ডব চালায় বিজেপি আশ্রিত গুণ্ডাবাহিনী। এই নক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শ্রী শুভঙ্কর সরকারকে সংহতি জানাতে গতকাল বিধান ভবনে যান বাংলা পক্ষর সাধারণ সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ্যায় ও সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি। সন্ধ্যা ৬টা ১০ এ সেখানে প্রদেশ সভাপতির সাথে গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের কথা চলাকালীন হঠাৎ কংগ্রেস সেবাদলের সভাপতি রাহুল পান্ডে, প্রমোদ পান্ডে এবং কংগ্রেস কাউন্সিলার সন্তোষ পাঠকসহ আরও একাধিক হিন্দিভাষী গুণ্ডা আক্রমণ করে গর্গ চট্টোপাধ্যায়। গর্গ চট্টোপাধ্যায় এসএসকেএম এ চিকিৎসা করান এবং ডাক্তারি পরামর্শ মত ভোর ৩’৩০ টার সময় বাড়ি ফেরেন।বাংলার রাজধানীতে বরেণ্য বাঙালি রাজনৈতিক নেতৃত্বের স্মৃতিধন্য প্রদেশ সদর দপ্তরে এই ঘটনা একেবারেই অপ্রত্যাশিত। কংগ্রেস দলটা এখন পরিচালনা করছে এইসব বহিরাগত ক্রিমিনালরা, এখানে বাঙালির কোন গুরুত্ব নেই। গতকাল প্রদেশ সভাপতি সহ একাধিক বাঙালি নেতৃত্ব এই গুণ্ডাদের থামাতে পারেনি, এতেই স্পষ্ট যে বাঙালি নেতারা আজ গুরুত্বহীন, নেহাতই আলঙ্কারিক পদে আছেন তাঁরা। অথচ বাংলায় কংগ্রেসের একমাত্র সাংসদ মালদা জেলায়, যেখানে ভোটার সকলেই বাঙালি। কংগ্রেসের এখনো যেটুকু ভোট আছে, তা বাঙালির জন্য। অথচ সেই দলের রাজ্য দপ্তর আজ বহিরাগত ক্রিমিনালদের দখলে।বাংলা পক্ষর স্পষ্ট দাবি প্রদেশ সদর দপ্তরে সভাপতির উপস্থিতিতে ঘটা এই ঘটনার দায় রাজ্য কংগ্রেসকে নিতে হবে। দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক দলীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।অন্যথায় বাঙালির প্রতিবাদ আন্দোলন তীব্র হবে, কংগ্রেসের বাঙালি ভোটাররাও মুখ ফেরাবে। মুর্শিদাবাদ, মালদার বাঙালিও ক্ষুব্ধ গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের উপর আক্রমণের ঘটনায়, এই ঘটনার প্রভাব ভোটে পড়বে।আজ এই ঘটনার বিরুদ্ধে বিকেল ৫:০০ টায় বাংলা পক্ষ সংগঠন বিধান ভবনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এবং তারপর এন্টালি থানায় ক্রিমিনালদের বিরুদ্ধে সকল প্রমাণ সহ অভিযোগ জানানো হয়। বাংলাপক্ষের তরফ থেকে হাজারো বাঙালি উপস্থিত ছিল। উপস্থিত ছিল বাংলাপক্ষ’র সাধারণ সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ্যায়, সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি, শীর্ষ পরিষদ সদস্য অরিন্দম চ্যাটার্জি,আব্দুল লতিফ, মনন মন্ডল, মহম্মদ সাহিন প্রমুখ। কৌশিক মাইতি বলেন, ‘আমরা রাহুল গান্ধী বিজেপির বিরুদ্ধে যে আদর্শিক লড়াই করছে সেই লড়াই এ আমরা সমর্থন জানাই, কিন্তু বাংলার কংগ্রেস বহিরাগতদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। রাহুল গান্ধী ফেডেরাল গঠনের কথা বলেন, ভাষার অধিকারের কথা বলেন, কিন্তু বাংলার কংগ্রেস তাকে পাত্তা দেয় না’।প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভংকর সরকার গতকাল এই ঘটনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলেও আজ শুভঙ্কর সরকার মিথ্যে আরোপ করেন। এখানেই প্রমাণ হয় বাংলার কংগ্রেসের মেরুদন্ড বহিরাগদের কাছে বিকিয়ে গেছে। অন্যান্য জাতির ক্ষেত্রে জাতির প্রশ্নে সমস্ত দল এক হয়ে দাঁড়ায়। বাংলায় জাতির প্রশ্নে বাঙালি রাজনৈতিক দলে বিভাজিত। বাঙালি আর কবে এক হবে?