
“‘ডাকাতিয়া বাঁশী’ খ্যাত শ্রেষ্ঠা দাস তার চার্টবাস্টারের সাফল্য উপভোগ করছেন; বললেন, ‘উইন্ডোজ আমাকে লঞ্চ করতে বড় একটি ঝুঁকি নিয়েছিল’”
শ্রেষ্ঠা বলেন, “আমি এখন একাধিকারী সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে অনেক কাজ করে চলেছি।
শ্রেষ্ঠা বলেন, “আমি এখন একাধিকারী সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে অনেক কাজ করে চলেছি।
৫০ দিনের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে চলল ‘বহুরূপী’। কিন্তু এতদিন পরেও, হাউজফুল হচ্ছে একের পর এক সিনেমাহল। হিন্দি সিনেমা মুক্তি পাওয়া সত্ত্বেও এখনও রেকর্ড পরিমাণ হলে চলছে ‘বহুরূপী’। উইন্ডোজ-এর ছবির এই সাফল্যে আপ্লুত শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় (Shiboprosad Mukherjee)। প্রযোজনা সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৯৭ টি প্রেক্ষাগৃহে চলছে ‘বহুরূপী’। এর মধ্যে ৯৫টি প্রেক্ষাগৃহ হল পশ্চিমবঙ্গে। ও দুটি প্রেক্ষাগৃহ হল অসম, বিহার ও ঝাড়খণ্ডে। এই ছবিটির সাফল্য নিয়ে শিবপ্রসাদ বলছেন, ‘আমাদের অনেক সিনেমা ২০০ দিন পার করেছে, ১০০ দিন পার করেছে। ‘বেলাশেষে’ কোয়েস্ট মাল্টিপ্লেক্সে ২১৭ দিন চলেছিল। নিজেই একটা রেকর্ড তৈরি করেছিল। তেমনই বহু সিনেমাই ১০০ দিন পার করেছে। কিন্ত আমার মনে পড়ে না আমাদের কোনও সিনেমাই সপ্তম সপ্তাহে, ৯৭টা হল নিয়ে ৫০ দিন পূর্ণ হয়েছে। এটা আমাদের কেরিয়ারে একটা মাইলফলক, একটা রেকর্ড। ভগবানের এই আর আশীর্বাদ মাথা পেতে নিলাম। আর দর্শকদের ভালবাসা না হলে হয় না। আর সমস্ত হলমালিককে ধন্যবাদ জানাব যাঁরা বহুরূপীর এই ৫০দিনকে এভাবে উদযাপন করছেন।’ কেরিয়ারের সবচেয়ে বড় ছবি ছিল ‘বহুরূপী’। সেই ছবি ব্যবসার নিরিখে পুজোয় মুক্তি পাওয়া ৩টি ছবির মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে। শিবপ্রসাদ বলছেন, ‘রক্তবীজ আমাদের সাহস দিয়েছিল। আর ‘বহুরূপী’ সাফল্য দিল। উইন্ডোজ় এরপরে আরও নতুন নতুন ছবি নিয়ে আসবে, নতুন গল্প বলবে। আমরা একটা কথাই বিশ্বাস করি, ছবির সাফল্যের জন্য তারকার প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজন হয় ‘ছবির বিষয়’-এর। যখন ‘হামি’ ছবিটা প্রযোজনা করেছিলাম, সবাই বলেছিলেন, ‘দুটো বাচ্চার মুখ দিয়ে পোস্টার, কে দেখবে’। কিন্তু ‘হামি’ সেই বছরের সবচেয়ে হিট ছবি ছিল উইন্ডোজ-এর। ‘বহুরূপী’ আমাদের নিজেদের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। পুজোর পাঁচ দিনে আড়াই লক্ষ মানুষ ছবিটি দেখেছেন। এভাবে চললে, আমরা শুধু থিয়েটারের রিলিজ়ের উপার্জন দিয়েই ছবি তৈরির টাকা তুলে নিতে পারব। বাংলা ছবির ইতিহাসে বোধহয় বহু বছর পরে এই ঘটনা হতে চলেছে।’
সুখের সময় খুব কম। তাই সেটা মেনে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। বলিউডে পা দিয়েই, এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন সদ্য ১৯ এ পা দেওয়া আলিয়া ভাট। সুপারস্টারদের জীবন সবসময়ই রঙিন নয়, একথা তাঁরা নিজেরাই অকপটে শিকার করে নেন। তবে বক্সঅফিসে একের পর এক ছবি যখন মুখ থুবড়ে পড়ে, ডিপ্রেশনের কালো মেঘ ধরা দেয় বইকি ! ঋত্ত্বিক রোশন, শাহিদ কাপুর, পরিণীতি চোপড়া, দীপিকা পাডুকোন থেকে হানি সিং-ডিপ্রেশন থেকে কেউ যাননি বাদ। এবার কথা হচ্ছে, কে কত দ্রুত সেটাকে মেনে নিয়ে এগোতে পেরেছেন, সেটাই হচ্ছে জীবনের পরীক্ষা। এবার আসা যাক মূল বিষয়ে, বলিউডে যিনি নিজেকে বহুকষ্টে গড়েছেন। রোমান্টিজমের শীর্ষে রাখা হয় যাকে, সেই শাহরুখ খানও, যাননি বাদ। জীবনের এই ওঠাপড়া থেকে। নিজেই জানিয়েছেন, ‘যখন জীবনে ব্যর্থতা এসে ঘিরে ধরেছে, বাথরুমে ঢুকে প্রচুর কেঁদেছি।’ দুবাইয়ের গ্লোবাল ফ্রেট সামিট উপস্থিত হয়েই মুখ খোলেন কিং খান। তিনি বলেন, ‘এমন অনেক দিন গিয়েছে বাথরুমে ঢুকে কেঁদেছি শুধু। আমি যে আছি, ভাবতেই যেনও ঘেন্না করত ! ঘৃণা জন্মাত মনে। তবে আমি সেটা কখনই কাউকে বাইরে থেকে বুঝতে দিই না। যখন আপনার ফিল্ম ব্যর্থ হয়েছে, তা মানে এই নয় যে কেউ আপনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে ! এই মাটি এই পৃথিবী কেউই আপনার বিরুদ্ধে নয়। হয়তো কোনওভাবে ভুল হয়ে গিয়েছে। কোনওভাবে খারাপ পারফর্মেন্স হয়ে গিয়েছে। এই অনুভূতি নিয়েই সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’ অনেকক্ষেত্রেই জীবন থেকে উঠে আসে চিত্রনাট্যের প্লট। কেউ চিৎকার করে তা বার করতে চায়। কেউবা ঘরের কোণায়। বাথরুমে জল চালিয়ে গোঙানির মুহূর্তও ভারতীয় ছবিতে ভুরিভুরি। জয় গোস্বামীর ‘গোঁসাই বাগান’ হোক কিংবা অপর্ণা সেনের ‘ইতি মৃণালীনি’ কিংবা অনুরাগ বসুর ‘লাইফ ইন অ্যা মেট্রো’- প্রায় এক ডজন ছবি দেড়শো কোটির আবেগ বহন করে চলেছে। দিনের শেষে মোদ্দা কথা এটাই, সেলেব হোক কিংবা সাধারণ, জীবনে চড়াই-উতারাই আসবেই। এবং তা পেরোতে হবে।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পথের পাঁচালী’র দুর্গার মৃত্যু ঘটেছিল আকস্মিক, বৃষ্টিতে ভিজে, অতি অল্প বয়সে। কালজয়ী ও ক্লাসিক এই উপন্যাসের চলচ্চিত্ররূপেও তাই দেখানে হয়েছিল। গল্পের কিশোরী মেয়েটিকে ওই ছবিতে যিনি জীবন্ত করে তুলেছিলেন– রসিকজনের কাছে যিনি নাম-চরিত্রের মতো ‘দুর্গা’ নামেই পরিচিত হয়ে গিয়েছিলেন– প্রয়াত হলেন তিনি, যথেষ্ট বৃদ্ধা বয়সে, দুরারোগ্য রোগে ভুগে। তিনি উমা দাশগুপ্ত। সোমবার, ১৮ নভেম্বর সকাল ৮.১৫ নাগাদ প্রয়াত হন উমা। সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’র ‘দুর্গা’ উমা দাশগুপ্তের জীবনাবসানে শোকের ছায়া শিল্প-সংস্কৃতি মহলে। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পথের পাঁচালী’র দুর্গা ঠিক যেন পাশের বাড়ির মেয়ে। কী আশ্চর্য সহজ-সরল ও সাধারণ! আর ওই অলৌকিক সাধারণত্বই তার অসাধারণত্ব। সেই অপূর্ব অসাধারণত্বকে যিনি ছোট ছোট শিল্পকাজের মধ্যে দিয়ে অবলীলায় পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছিলেন, অনায়াসে হয়ে উঠেছিলেন অপুর দিদি, তিনি উমা দাশগুপ্ত। জীবনে এই একটি ছাড়া দ্বিতীয় ছবি করেননি। কেন করেননি, সেটা একটা প্রশ্ন। কিন্তু সেই রহস্য কেউ ভেদ করেননি, তিনি নিজেও না। শুধু জানা যায়, থিয়েটার আঁকড়েই বাঁচতে চেয়েছিলেন উমা। ছোট থেকেই থিয়েটার করতেনও। যে-স্কুলে পড়তেন তার প্রধানশিক্ষকের সঙ্গে সখ্য ছিল সত্যজিৎ রায়ের। সেই শিক্ষকের সাহায্যেই তাঁর ‘দুর্গা’কে খুঁজে পান সত্যজিৎ। পরিবার প্রথমে রাজি না হলেও, পরে সত্যজিৎ অনুমতি আদায় করে নেন। তার পর তো ইতিহাস তৈরি হয়ে যায়! যে আবাসনে উমা দাশগুপ্ত থাকতেন, সেই একই আবাসনে থাকেন অভিনেতা-পরিচালক-বিধায়ক চিরঞ্জিৎ চট্টোপাধ্যায়। তিনিই প্রাথমিক ভাবে উমাদেবীর প্রয়াণের খবর নিশ্চিত করেন। তিনি শোকও প্রকাশ করেন উমাদেবীর প্রয়াণে। সাদা-কালো ব্যাকগ্রাউন্ডে অপু-দুর্গার সেই চরিত্রচিত্রণ আজও সকলের মনে সজীব স্মৃতি হয়ে আছে। সত্যজিতের সিনেমা-উত্তর বাঙালি আজও বিভূতিভূষণের ‘পথের পাঁচালী’ পড়তে গেলে মানসচক্ষে যেন সিনেমার দুর্গাকেই দেখে। দীর্ঘদিন অন্তরালে থাকলেও বাঙালির স্মৃতি-সত্তায় তাই তাঁর কালজয়ী উপস্থিতি।