৯ আগস্ট, শনিবার, কলকাতাঃ ভারতের বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলায় কথা বলায় হিন্দু- মুসলিম নির্বিশেষে বাঙালিদের উপর “বাংলাদেশী” তকমা দিয়ে নির্যাতনের ঘটনা নিয়মিত ঘটে চলেছে। ডিটেনশন ক্যাম্পে ঢুকিয়ে চলছে অকথ্য অত্যাচার। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোয় প্রশাসন সরাসরি হিন্দু- মুসলিম সকল বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার করছে, ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি করছে। হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে বাঙালি কাজ হারিয়ে, মার খেয়ে রাজ্যে ফিরছে। অথচ এখানকার কাজ সব বহিরাগতদের দখলে। বাংলায় সমস্ত শিল্পাঞ্চল ও শহরাঞ্চলের কোটি কোটি কাজ বহিরাগতদের দখলে। কলকাতা সহ সব শহর দখল হয়ে গেছে।
বাঙালির রক্তে স্বাধীন ভারতে বাঙালির উপর এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে আজ রাখি পূর্ণিমার দিন কলকাতায় মিছিল করল বাংলা পক্ষ। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে রাখি বন্ধন উৎসব চালু করেছিলেন কবিগুরু রবি ঠাকুর৷ তাই এই ঐতিহাসিক রাখি বন্ধনের দিনই কলেজ স্ট্রীট থেকে শুরু হয়ে এই মিছিল শেষ হয় শ্যামবাজারে বীর সুভাষের মূর্তির পাদদেশে। রাখি বন্ধনের মাধ্যমে বাঙালির ঐক্যের যে বার্তা দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সেই ঐতিহাসিক ঘটনাকে স্মরণ করে রাখি বন্ধনের মাধ্যমেই বাঙালির ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের ডাক দিল বাংলা পক্ষ।
সংগঠনের সাধারন সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন ” হিন্দি সাম্রাজ্যবাদী বাঙালি বিদ্বেষী বিজেপি বাঙালির মুখের ভাষা থেকে নাগরিকত্ব সব কিছুই কাড়তে চায়। বিজেপি চায় বাঙালি জাতিকে ধ্বংস করতে। কিন্তু বাংলা পক্ষ তা হতে দেবে না, বাঙালি জেগে উঠেছে, বাঙালি জাতীয়তাবাদের ঝড় ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে। আমরা ভারতের মাটিতে প্রথম সারির নাগরিক হয়ে মাথা উঁচু করেই বাঁচব।” তিনি বাংলার সরকারের কাছে দাবি করেন, “অবিলম্বে ভূমিপুত্র সংরক্ষণ আইন করে, ভিন রাজ্য থেকে ফিরে আসা বাঙালিদের কাজের ব্যবস্থা করার। বাঙালি কাজ হারিয়ে ঘরে বসে থাকবে আর বাংলায় দু কোটি বহিরাগত কাজ করবে এটা চলতে পারেনা, বলেই তিনি উল্লেখ করেন।”
সাংগঠনিক সম্পাদক তথা শীর্ষ পরিষদ সদস্য কৌশিক মাইতি বলেন ” মুসলমান অনুপ্রেবশকারী, রোহিঙ্গা তাড়ানোর নাম করে বিজেপি বাঙালি জাতিকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোয় হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে বাঙালি আক্রান্ত। আক্রমণের কারণ ধর্ম নয়, মাতৃভাষা। কারণ বাবাই সর্দার থেকে বুদ্ধদেব বারিকের মতো হাজার হাজার হিন্দু বাঙালিকে অত্যাচার করা হয়েছে ডিটেনশন ক্যম্পে ঢুকিয়ে। আমরা বাঙালি জাতি হিসেবে আক্রান্ত, তাই প্রতিরোধ গড়তে হবে বাঙালি হিসেবেই।”
এদিনের মিছিলে বাংলা পক্ষর শীর্ষ পরিষদের অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়, আব্দুল লতিফ, সম্রাট কর, মহ সাহীন, সৌম্য কান্তি ঘোড়ই ও বিভিন্ন জেলা সম্পাদক সহ জেলা নেতৃত্ব অংশ নেন। হাজার হাজার বাঙালি এই মিছিলে হাঁটে। মিছিলে বাঙালির উপর অত্যাচার বন্ধের দাবি ওঠে এবং দাবি ওঠে বাংলায় ভূমিপুত্র সংরক্ষণ করে বাঙালিকে চাকরি- কাজ দেওয়ার৷ বাংলা পক্ষর মিছিল ঘিরে বাঙালির উৎসাহ তাক লাগিয়ে দেবে৷
