১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, কলকাতা: সিপিএমের যুবনেতা সায়ন ব্যানার্জি শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপি নেতাদের বিধানসভার বাইরে মাথায় গেরুয়া পাগড়ি পরে প্রতিবাদের ছবিকে ইঙ্গিত করে ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন-“মাথার পাগড়ি দেখে বোঝা মুশকিল এটা বাংলার বিধানসভা নাকি এটা কোনা হিন্দিভাষী রাজ্যের বিধানসভা, এত বাঙালি বিদ্বেষী কেন? কিসের জন্য? এই শুভেন্দু বাবুইতো পূর্ব মেদিনীপুরের বুকে রাজনীতি করতে গিয়ে বারংবার সতীশ সামন্ত, সুশীল ধারার আবেগে শান দিয়ে ভাষন দেন, সেই শুভেন্দু অধিকারির নেতৃত্বে বিজেপির বিধায়কদের দেখলে বাঙালির নিজস্বতা খুজে পাওয়া মুশকিল।। ২০১৪ থেকে বিজেপি বাংলার সংসদীয় রাজনীতিতে আসন জিতছে ২০২১ সালে বাংলার মানুষ বিজেপিকে প্রধান বিরোধী দলের আসনে বসালো কিন্তু বাস্তবতা দেখে বোঝাই যাচ্ছে বিজেপি আজও বাঙালিয়ানা কে আপন করে নিতে পারে নি, গো বলয়ের রাজ্যের সংস্কৃতির প্রয়োগ বাঙালি আগেও মানেনি আর ভবিষ্যতেএ মানবে না।”

আবার সিপিএমের যুবনেত্রী দিপ্সীতা ধর গতকাল ১৭ ফেব্রুয়ারি, সোমবার ফেসবুক পোস্ট করেছেন-

কলকাতায় নেমে ট্যাক্সি খুঁজতে চাইলে, ৯০% সময় ওপারের ড্রাইভারটি হিন্দিতে জবাব দেবেন, আপনি বাংলা তে বললেও ওপার থেকে জবাব আসবে হিন্দিতে, ব্যাপারটা এমন যেন আপনিই পশ্চিমবঙ্গে হিন্দি না বলে অপরাধ করে ফেলেছেন। এবং এ রোগ শুধু হিন্দিভাষী তেই সীমাবদ্ধ নেই, এয়ারপোর্টের লাইনে দাঁড়িয়ে একটি ধোপদুরস্ত মেয়ে ডিজিযাত্রা বোঝাচ্ছেন হিন্দি তে, আমি সচেতন ভাবেই তাকে বাংলায় প্রশ্ন করি, মেয়েটি হিন্দিতে জবাব দেয়। “তুমি বাংলা জানোনা?” প্রশ্ন করায় স্পষ্ট বাংলায় সে জানায় সে বাঙালি। তবে হিন্দি তে বলছে কেন? আসলে মাথার মধ্যে ঢুকে গেছে “হিন্দি ভারতের রাষ্ট্র ভাষা”, ভারতের ইউনিভার্সাল ভাষা, কাজের ভাষা। অথচ আমাদের মতো বহুভাষী দেশে কোনো ভাষার আরোপিত সমসত্বতা আসলে আগামীর সাংস্কৃতিক, ধার্মিক এবং অবশ্যই রাজনৈতিক সমসত্বতার প্রাথমিক সোপান। এবং এই নির্মাণে আদতে লাভ কার হয় আমরা সকলেই তা জানি।
আর কিছুদিন পরেই ২১ শে ফেব্রুয়ারী, বাংলা ভাষা নিয়ে উদ্বেল হওয়ার দিন। কবিতায়, ছবিতে বাঙালি তার গৌরব মনে করবে, খালি ভুল করেও মনে করবে না, কাদের জন্য পশ্চিমবঙ্গের সরকারি বাংলা মিডিয়াম স্কুল গুলো বন্ধের মুখে, কেন বাঙালী শ্রমিক পরিযায়ী হয়ে পৌঁছে যাচ্ছে দিল্লী ব্যাঙ্গালোর এর বস্তি তে, বাংলাদেশি তকমায় কোন বাঙালি আক্রান্ত হচ্ছে, জেল খাটছে, খুন হয়ে যাচ্ছে হরিয়ানা, রাজস্থানে? ২১ শে ফেব্রুয়ারীর মাটি প্রশ্ন করতে চাইবে না, কেন ঢাকার মাটিতে ২০২৫ এ লেগে থাকে আদিবাসী মেয়ের চাপ চাপ রক্ত?
আসলে বাংলা ভাষার এটাও একটা মজা, বাঙালি মেরেও জয় বাংলা বলে যাওয়া যায়।

তাহলে কি সিপিএমের তরুণ প্রজন্ম বাংলামুখী? বাংলা জাতীয়তাবাদী? উর্দুভাষী মহঃ সেলিমের চাপেই কি দলের মধ্যে উন্মুক্ত বাক্য প্রকাশে কোণঠাসা? নাকি ভোটের রাজনীতিতে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদকেই তারা অস্ত্র হিসেবে বেছে নিচ্ছে? প্রশ্ন অনেক। সামনে এখনও অনেক পথ চলা।